নারীর নেতিবাচক সামাজিকীকরণ বলতে কী বুঝ?
অথবা, নারীর সামাজিকীকরণের
অথবা, নারীর সামাজিকীকরণের
নেতিবাচক দিক বলতে কী বুঝায়?
নেতিবাচক দিক কী?
অথবা, নারীর সামাজিকীকরণের নেতিবাচক দিক তুলে ধর।
অথবা, নারীর নেতিবাচক সামাজিকীকরণ কাকে বলে?
অথবা, নারীর নেতিবাচক সামাজিকীকরণ সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিকীকরণ একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন মানুষ পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্ব অর্জনে সক্ষম হয়। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের মূল্যবোধগুলো তাকে ধারণ ও লালনপালন করতে হয়। সামাজিকীকরণের মাধ্যমেই একজন মানুষ নারী পুরুষ নির্বিশেষে নিজেকে সম্মান করতে শেখে। আত্মমর্যাদা অর্জন করতে শেখে এবং বৃহত্তর সামাজিক
পরিসরে নিজের জন্য নির্দিষ্ট স্থান অর্জন করে। এ সামাজিকীকরণ ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুইই হতে পারে। সাধারণত নারীর ক্ষেত্রে সামাজিকীকরণ হয় নেতিবাচক।
নারীর নেতিবাচক সামাজিকীকরণ কী : নেতিবাচক সামাজিকীকরণ বলতে বুঝায় এমন এক প্রক্রিয়া যার – মাধ্যমে একজন নারী জন্ম থেকেই পুরুষের তুলনায় ভিন্ন এবং অধস্তন মূল্যবোধ নিয়ে বেড়ে উঠে। আমাদের সমাজে “নারীত্ব”কে দুর্বল ও অক্ষমতার সাথে সমার্থক করে দেয়া যায় এবং নারীকে “মেয়ে ছেলে” “মেয়ে মানুষ” “মেয়ে লোক” ইত্যাদি বলে সম্বোধনও করা হয়। বিপরীতে পুরুষত্বকে সাহসী ও সক্ষমতার প্রতীক বলে গণ্য করা হয়। এ মানসিক ব্যবধান নারীকে বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে প্রতিপদে পুরুষের সহগামী না করে অনুগামী করে তোলে। ফলে নারী নারীই রয়ে যায়, মানুষের মর্যাদা অর্জন করতে পারে না। তার কাজের ক্ষেত্র ভিন্ন বলে চিহ্নিত হয়। তার খেলাধূলা ও খেলার সামগ্রীতেও ভিন্নতা তৈরি করা হয়। এভাবে এক Sub-Culture ও Inferior values নিয়ে নারী বেড়ে উঠে এবং জীবন অতিবাহিত করে। তার মতামত পরিবারে এবং সমাজে গুরুত্ব পায় না। পছন্দ অপছন্দ কারো বিবেচনার যোগ্য হয়ে উঠে না। নারী তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং দুর্বল ও অসহায় মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অন্যতম কারণ হলো নারীর নেতিবাচক সামাজিকীকরণ। এ নেতিবাচক সামাজিকীকরণের ফলে সমাজে নারীর প্রতি বিরূপ আচরণ ও সহিংসতা বৃদ্ধি পায়। তাই অবশ্যই নেতিবাচক সামাজিকীকরণ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।