নারীর অধস্তনতার কারণ পিতৃতন্ত্র- সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, পিতৃতন্ত্র নারীকে অধস্তন করে রেখেছে- তুমি কী একমত?
অথবা, নারীর অধস্তনতার প্রধান কারণ পিতৃতন্ত্র-ব্যাখ্যা কর।
অথবা, নারীর অধস্তনতার কারণ হিসেবে পিতৃতন্ত্র ব্যবস্থার বর্ণনা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : বিজ্ঞানের উন্নয়নের সাথে সাথে নারীরা সমাজে পুরুষের অধস্তন হয়ে পড়ে। বর্তমান পৃথিবীর সামান্য কিছু স্থানে মাতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকলেও তা অত্যন্ত দুর্বলভাবে টিকে আছে। প্রচলিত পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে নারীদেরকে পুরুষের অধস্তন করে রাখা হয়েছে এবং তাদেরকে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
নারীর অধস্তনতার কারণ পিতৃতন্ত্র : নিম্নে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে একজন নারী কিভাবে তার জীবনের সকল ক্ষেত্রে পিতৃতন্ত্র দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় তা আলোচনা করা হলো :
১. জন্মকালে : জন্মের পূর্ব থেকেই আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা বৈষ্যমের স্বীকার হয়। কারণ শিশু জন্মের পূর্বে পিতারা সাধারণত ছেলে সন্তান কামনা করে। এক্ষেত্রে মেয়ে সন্তান হলে তাদের আশা পূরণ হয় না। ফলে মেয়ে শিশু, ছেলে শিশুর মতো গ্রহণীয় হয় না।
২. শিশুকাল : জন্ম থেকেই যে বৈষম্য নিয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করল শিশুবেলায় সে শিশু বৈষম্যের স্বীকার হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই পরিবারে ছেলে শিশুদের যেমন ভালো ভালো খাবার দেয়া হয় মেয়ে শিশুদের সে রকম ভালো খাবার দেয়া হয় না। ছেলে শিশুর যেমন যত্ন নেয়া হয় মেয়ে শিশুর তেমন যত্ন নেয়া হয় না।
৩. বাল্যকাল : শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি মূলত এ সময় থেকেই হয়। তাই শিশুদের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন দেখা দেয়। এসময় ছেলে ও মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে যত্নের তারতম্য দেখা যায়। এমনকি এ বৈষম্য দেখা যায় শিক্ষা ক্ষেত্রেও।
৪. যৌবন কাল : যৌবন কাল বাংলাদেশের অধিকাংশ মেয়ের জীবনে আসে না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বলা হয় ‘মেয়েরা কুড়িতে বুড়ি’ । এ মতবাদকে বিশ্বাস করে অল্প বয়সে তারা সাংসারিক জীবনধারণ করতে বাধ্য হয়।
উপসংহার : উপরের আলোচনা থেকে দেখা যায়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী পুরুষের চেয়ে অধস্তন অবস্থায়রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নারীরা বঞ্চিত হয় তাদের মৌলিক অধিকার থেকে। তাই বর্তমান সময়ে সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য পরিহার করতে হবে।