নারীনির্যাতন বন্ধের উপায়সমূহ কী কী?
অথবা, কীভাবে নারীনির্যাতন রোধ করা যায়?
উত্তর৷ ভূমিকা : বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ভয়াবহ একটি রূপ হলো নারীনির্যাতন। বর্তমান পৃথিবীতে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজন ঘরের ভিতরে কিংবা বাইরে শারীরিক, মানসিক বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। গত দুই দশক ধরে নারীনির্যাতন বাংলাদেশে অন্যতম সামাজিক ইস্যু হিসেবে আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছে।
এমন কোন দিন নেই যেদিন পত্রিকার পাতায় এক বা ততোধিক নারী নির্যাতনের খবর ছাপা হয় না।
নারীনির্যাতন বন্ধের উপায় : নারীনির্যাতন আজ একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এটি প্রতিরোধ
করা সহজ কাজ নয় । এর জন্য সামাজিক অঙ্গীকারের প্রয়োজন। নিম্নে নারীনির্যাতন বন্ধের উপায়সমূহ উল্লেখ করা হলো :
১. নির্যাতনের কারণ, ধরন ও প্রকৃতি সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা ও সমাধানকল্পে ব্যবস্থা গ্রহণ ।
২. ধরন ও প্রকৃতির সাথে মিল রেখে আইন প্রণয়ন করা।
৩
৩.পুরুষতান্ত্রিক মূল্যবোধ দূরীকরণার্থে উভয়ের চরিত্র, কর্তব্য ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।
৪. অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
৫.মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য রক্ষণাত্মক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ছেলেমেয়ে উভয়কে পারিবারিক দিক দিয়ে নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়া।
৭. নৈতিক চরিত্র গঠনমূলক পাঠ্যপুস্তক পাঠদান বাধ্যতামূলক করা।
৮. প্রচার মাধ্যম, যেমন- রেডিও, টিভি ও সংবাদপত্রগুলোকে নারীনির্যাতন বন্ধ সম্পর্কিত অনুষ্ঠান প্রচার ও পত্রিকায় বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে।
৯. মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
১০. নির্যাতিতা মহিলাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
১১. এসিড বিক্রয় কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
১২. নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে জাতীয় পর্যায়ে একটি ‘Platform for Action’ প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।
১৩. দেশের সকল সংবাদপত্রকে নারীর বিরুদ্ধে পরিচালিত সহিংসতা রোধে সচেতন ও সমন্বিত ভূমিকা পালন করতে হবে।
১৪. সর্বোপরি নারীনির্যাতন বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, সমাজে নারীদের উপর যে ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র দেখা যায় তা শুধু নারীসমাজ নয় গোটা সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই উপরের আলোচনায় নারীনির্যাতন বন্ধে যেসব পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে তা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে নারীনির্যাতন হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।