Answer

তাই তুমি মুক্তপক্ষ নিভৃত ডাহুক পূর্ণ করি বুক, রিক্ত করি বুক অমন ডাকিতে পার। আমরা পারি না।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু ইসলামি পুনর্জাগরণের কবি ফররুখ আহমদ রচিত ‘ডাহুক’ কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কবি এখানে ডাহুকের অনুষঙ্গে অধ্যাত্ম সাধনায় নিজের দুর্বলতার দিকটি তুলে ধরেছেন।
বিশ্লেষণ : সমস্ত প্রকৃতি যখন গভীর ঘুমে অচেতন তখনও ডাহুক জেগে থাকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো। সে শুধু জেগেই থাকে না; অবিশ্রান্ত ডাকের মাধ্যমে সচেতন প্রহরীর কাজ করে যায়। সচেতন প্রহরী যেমন রাত জেগে পাহারার মাধ্যমে মালিক বা তার প্রভুকে বিপদ সম্পর্কে আগাম সতর্কবাণী শোনায়, ডাহুকও তেমনি ডেকে ডেকে মানুষের কৃতকর্ম সম্পর্কে সচেতন করে দেয়। ডাহুক মুক্ত স্বাধীন প্রাণ। তার একনিষ্ঠতা নিয়ে সমাজ জীবনে নানা গল্প চালু আছে। সঙ্গী বিচ্ছেদে ডাহুক তার মনপ্রাণ উজাড় করে ডেকে যায় সঙ্গীর খোঁজে। প্রিয়পাত্রকে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত তার ডাকের বিরাম ঘটে না। ডাকতে ডাকতে কখনো কখনো সে নিজের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে। মানুষ পরমাত্মার অংশ। সে তার অন্তরে পরমাত্মার অস্তিত্ব অনুভব করে, তার সান্নিধ্য কামনায় উন্মুখ হয়ে থাকে। কিন্তু একনিষ্ঠভাবে তাকে ডাকতে পারে না। কেননা মানুষ ডাহুকের মতো মুক্ত হৃদয়ের অধিকারী নয়। তার জীবন নানা পার্থিব লোভ-লালসার শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত। সে ডাহুকের মতো মুক্ত স্বাধীন হতে চাইলেও সংসার তাকে মুক্তি দেয় না।
মন্তব্য : ডাহুকের শৃঙ্খলহীন জীবনের সঙ্গে কবি মানুষের পরাধীন জীবনের তুলনা করে মানবাত্মার হাহাকারকেই বাঙ্ময় করে তুলেছেন।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!