তবে এ একটি কথা বলা যেতে পারে যে মানুষ অনেক সময় বেশি করে যা ভাবে চোখেও সে তাই দেখে।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : উদ্ধৃত অংশটুকু যুক্তিনিষ্ঠ প্রাবন্ধিক কাজী আবদুল ওদুদের ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে সংগৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : রামকৃষ্ণ পরমহংসের ধর্মচিন্তা প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক উক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
বিশ্লেষণ : বাংলার চিরপরিচিত প্রগলভা ভক্তি রামকৃষ্ণের জীবনে আশ্চর্য পরিণতি লাভ করেছিল। ভক্তির আতিশয্যে সমস্ত ধর্মে একই প্রেরণার সন্ধান খুঁজে রামমোহন বলেছিলেন- “বিভিন্ন ধর্মের ভিতরে পরস্পরবিরোধী অনেক নিত্যবিধি বর্তমান, তাই সব ধর্মই সত্য এ কথা মানা যায় না, তবে সব ধর্মের ভিতরেই সত্য আছে।” দেবেন্দ্রনাথ রামমোহনের এ মীমাংসা মেনে চলেছিলেন। কিন্তু কেশবচন্দ্রের ভক্তিপ্রধান প্রকৃতির কাছে রাজার এ মীমাংসা ব্যর্থ হলো। তিনি বললেন “আমাদের অবস্থান কোনো প্রতিষ্ঠিত ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। কেননা, পৃথিবীতে সব ধর্মই সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।” এ কথাই রামকৃষ্ণ আরো সোজা করে বললেন- ‘যত মত তত পথ।’ এ মতের ব্যাখ্যা করে তিনি বললেন, তিনি সাধনা করে দেখেছেন শাক্ত বৈষ্ণব বেদান্ত সুফি খ্রিস্টান ইত্যাদি সব পথই এক ‘অখণ্ড সচ্চিদানন্দে’র অনুভূতিতে নিয়ে যায়। রামকৃষ্ণ পরমহংসকে কেউ বলেছেন অবতার কেউ বলেছেন উন্মাদ। কিন্তু যে যাই বলুন বাঙালি হিন্দু চিত্তের উপর এ মত যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল। প্রাবন্ধিক মন্তব্য করেছেন যে মানুষ অনেক সময়ে বেশি করে যা ভাবে চোখেও সে তাই দেখে। রামকৃষ্ণের বেলায় এ সত্যটি অক্ষরে অক্ষরে সত্য। তাঁর অন্তরে মানুষের জন্য যে সুনিবিড় প্রেম ছিল তা তিনি তাঁর ধর্মমতে বলেছেন।
মন্তব্য: মানুষ যা সবচেয়ে বেশি করে ভাবে বাস্তবেও সে সবকিছুর মধ্যে তার প্রতিফলন খুঁজে পায়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b0%e0%a6%a3-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80-%e0%a6%86/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*