চিরস্থায়ী লোকালয় কোনো যুগে হয়নি তো গড়া পারেনি ইজিপ্ট, গ্রিস সেরাসিন শিল্পীর আঙুল।”— ব্যাখ্যা কর।
উৎস : আলোচ্য অংশটুকু বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কবি আল মাহমুদ বিরচিত ‘সোনালী কাবিন’ কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত ‘সোনালী কাবিন : ৫’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কবি এখানে প্রেম-চেতনার সাথে নিসর্গ চেতনার চমৎকার মিলন উপলব্ধি করেছেন।
বিশ্লেষণ : আবহমানকাল ধরে মানব-মানবীর জীবনে প্রেম প্রবহমান। কিন্তু কালের বাস্তবতায় প্রেম ভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। পৃথিবীর কোনকিছু চিরস্থায়ী নয়। সবকিছু পরিবর্তনশীল। ইজিপ্ট গ্রিস ও সেরাসিনের মতো বিশাল বিশাল সভ্যতা কালের আবর্তনে ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রেমও ধ্বংসশীল। প্রেমও একসময় পাণ্ডুর বর্ণ ধারণ করে। কবির প্রাণে একবার যে প্রেমের ঝড় উঠে, সে প্রেমও এক সময় বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু প্রেমের আবেদন চিরন্তন। মানব-মানবীর প্রেম-আকাঙ্ক্ষার কোন দেশ-কাল ভেদ নেই। যুগে যুগে কালে কালে নর-নারীর হৃদয়বৃত্তির আকাঙ্ক্ষা একই। সুতরাং নর-নারীর যৌন আবেদন চিরন্তন সত্য। এ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত সভ্যতা গড়ে উঠেছে, সবকিছু বিলীন হয়ে গেছে। সভ্যতা কোনদিন চিরস্থায়ী হতে পারেনি। কাল সবকিছু গ্রাস করে নিয়েছে। পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়, তবে মানব-মানবীর চিরন্তন প্রেম-আকাঙ্ক্ষা কোনদিন নিঃশেষ হয় না। কালের স্রোতে সবকিছু হারিয়ে যায়। এ হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে কবিকল্পনা ভাব আবেগে স্থায়িত্বের দাবি রাখে।
মন্তব্য : কবি এখানে ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালন করেছেন।