“ঘুমের নিবিড় বনে সেই শুধু সজাগ প্রহরী। চেতনার পথ ধরি চলিয়াছে তার স্বপ্নপরী মন্থর হাওয়ায়।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : উদ্ধৃত অংশটুকু ইসলামি রেনেসাঁর কবি ফররুখ আহমদ রচিত ‘ডাহুক’ কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে ডাহুকের একনিষ্ঠ ডাক কবিচেতনায় যে আলোড়ন তুলেছে তার কথা বলা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : কবির অন্তর্লোকে একটি ঋষিসত্তা বিদ্যমান, যা জৈবিকতার বন্ধন ছিন্ন করে পরমাত্মার সাথে মিলিত হতে চায়। কিন্তু সে পথে অনেক বাধা। কবি নিজের জীবনসত্যকে ডাহুকের সঙ্গে মিশিয়ে জীবনের অপূর্ণতা খুঁজে পান। ডাহুকের স্তব্ধবিদারী ডাক কবিচেতনায় অতৃপ্তি ও অপ্রাপ্তির যাতনাকে তীব্রতর করে তোলে। মানুষ ডাহুকের সুরের মাহাত্ম্য বুঝে না। আত্মপীড়নে নিজেদের দগ্ধ করে চলেছে মানুষ । দেহমনে পাপলিপ্ত কদর্য মানুষের সাথে ডাহুকের কোন মিল নেই। তার ডাকের একনিষ্ঠতা জীবন মৃত্যুর পার্থক্যকে ঘুচিয়ে দেয়। সে যা চায় তা না পাওয়া পর্যন্ত তার ডাকের বিরাম নেই। কথিত আছে, ডাহুক ডাকতে ডাকতে মুখে রক্ত তুলে আনলেই কেবল ডিম ফোটে, বাচ্চা জন্ম নেয়। ডাহুক যে একনিষ্ঠতার সঙ্গে অন্তর্গত প্রেরণাকে কণ্ঠে তুলে আনে মানুষ তা পারে না। পরম প্রভুকে পাওয়ার জন্য ডাহুকের সুর অফুরান সুরা কবি চিত্তে ছড়িয়ে দেয় এক অনির্বচনীয় ভাবের প্রেরণা। কবি ডাহুকের ডাক অতীন্দ্রিয় জগতের এক ব্যঞ্জনা হিসেবেই শুনতে পান। কবি উপলব্ধি করেন ডাহুক যেন এক পবিত্র সত্তার বাণী প্রচার করে চলেছে।
মন্তব্য : তমসাচ্ছন্ন এ পৃথিবীতে একমাত্র ডাহুকের সুর-ই আলোকবর্তিকা হয়ে কবির উপলব্ধিতে টিকে আছে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a1%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a7%81%e0%a6%95-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%ab%e0%a6%b0%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%96-%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a6%ae%e0%a6%a6/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*