গণসংখ্যা নিবেশনের প্রস্তুতপ্রণালি লিখ ।

অথবা, কিভাবে গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুত করা হয়?
অথবা, গণসংখ্যা নিবেশনের প্রস্তুতপ্রণালি তুলে ধর।
অথবা, গণসংখ্যা নিবেশনের প্রস্তুতপ্রণালি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
পরিসংখ্যান তত্ত্বের মধ্যে গণসংখ্যা নিবেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তথ্যবিশ্বে
অনেকগুলো একক থাকে। আবার এ তথ্যগুলোর এক একটি সংখ্যাত্মক এককের পুনরাবৃত্তি ঘটে। প্রতিটি সংখ্যার যতবার পুনরাবৃত্তি ঘটে তার সংখ্যাগুলোর সংখ্যাকে ঐ পরিমাণ বা গণসংখ্যা বলে। নিম্নসীমা সে শ্রেণির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নিম্নতম মান নির্দেশ করে এবং উচ্চসীমা সে শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত উচ্চতম মান নির্দেশ করে । গণসংখ্যা নিবেশন এ সীমা নির্ধারণে সহায়তা করে থাকে ।
গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুতপ্রণালি : পরিসংখ্যানে প্রাথমিক উৎস থেকে সংগৃহীত উপাত্তসমূহ প্রথম অবস্থায় এলোমেলো বা অবিন্যস্তভাবে থাকে। এ ধরনের অবিন্যস্ত উপাত্তকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ করে সারণি বা তালিকায় উপস্থাপন করা হয়। এরূপ ছকবিশিষ্ট তালিকাকে গণসংখ্যা নিবেশন বলে। গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুতকালে নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করতে হয় ।
১. পরিসর নির্ণয় : অবিন্যস্ত উপাত্ত থেকে গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুত করার জন্য প্রথমেই প্রদত্ত উপাত্তসমূহের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সংখ্যামান শনাক্ত করে পরিসর নির্ণয় করতে হবে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সংখ্যামানের পার্থক্যই হলো পরিসর। অর্থাৎ পরিসর = সর্বোচ্চমান – সর্বনিম্নমান ।
২. শ্রেণিসংখ্যা নির্ণয় : গণসংখ্যা নিবেশনে কয়টি শ্রেণি থাকবে এ ব্যাপারে কোনো সর্বসম্মত নিয়ম নেই । তবে শ্রেণিসংখ্যা নির্ধারণে তথ্যের প্রকৃতি, মোট তথ্য সংখ্যা, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্নমানের পার্থক্য ইত্যাদি বিবেচনা করে সাধারণ জ্ঞান ও বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে শ্রেণিসংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। শ্রেণিসংখ্যা নির্ধারণে পরিসংখ্যানবিদগণ মোটামুটিভাবে ধারণা প্রদান করেছেন। তাঁদের মতে, শ্রেণিসংখ্যা ৫ থেকে ২৫টির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা ভালো। শ্রেণিসংখ্যা নির্ণয়ের সূত্র নিম্নরূপ :
শ্রেণিসংখ্যা বর্তমানে শ্রেণিসংখ্যা নির্ধারণে পরিসংখ্যানবিদ Struges এর সূত্র প্রচলিত রয়েছে । Struges এর সূত্রটি নিম্নরূপ : K = ১ + ৩.322 log N এখানে, = রিসর শ্ৰেণীব্যাপ্তি K = শ্রেণিসংখ্যা N = মোট উপাত্ত ৩. শ্রেণিব্যবধান বা শ্রেণিব্যাপ্তি নির্ধারণ : গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুতকালে শ্রেণিব্যবধান বা ব্যাপ্তি নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । শ্রেণিব্যবধান বা ব্যাপ্তি সাধারণত ৫/১০/১৫ ইত্যাদি যে কোনো পূর্ণ সংখ্যার মান হতে হবে । শ্রেণিব্যাপ্তি নির্ধারণের দুটি পদ্ধতি রয়েছে । যথা : (ক) সাধারণ নিয়ম ও (খ) Struges এর নিয়ম ।
ক. সাধারণ নিয়ম : সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী পরিসরকে ৫ অথবা ২৫ দ্বারা ভাগ করে যে ভাগফল পাওয়া যাবে তার মধ্যবর্তী কোনো পূর্ণসংখ্যাকে শ্রেণিব্যাপ্তি ধরা হয়। ধরা যাক এ পরিসর = ৩৫ এবং শ্রেণিসংখ্যা = ৬ তাহলে ৩৫ ÷ ৬ = ৫.৮৩ অর্থাৎ ৬ হবে শ্রেণিব্যাপ্তি । কেননা ৫ এর পরবর্তী পূর্ণসংখ্যা হলো ৬ ।
খ. Struges এর নিয়ম: Struges এর নিয়ম অনুযায়ী শ্রেণিব্যাপ্তি নির্ধারণের সূত্রটি নিম্নরূপ :
পরিসর পরিসর শ্রেণিব্যাপ্তি শ্রেণিসংখ্যা ১ + ৩.৩২২ log N
৪. শ্রেণিসীমা নির্ধারণ : শ্রেণিব্যাপ্তি অনুযায়ী প্রতিটি শ্রেণির নিম্নসীমা ও ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করা হয় । সাধারণত প্রদত্ত তথ্যের সর্বনিম্ন মান বা উক্ত মানের পূর্ববর্তী যে সংখ্যার ডান পার্শ্বে ০ অথবা ৫ থাকে সে সংখ্যা থেকে প্রথম শ্রেণির নিম্নসীমা শুরু করতে হবে এবং প্রদত্ত তথ্যের সর্বোচ্চ সংখ্যামান ঊর্ধ্বসীমায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত শ্রেণিসীমা চলতে থাকবে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, পরিসংখ্যানে গণসংখ্যা নিবেশন উপর্যুক্ত প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করা হয়ে থাকে ।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*