গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণের মধ্যে সম্পর্ক কী?

অথবা, গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণের
অথবা, গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণের মধ্যে সম্পর্ক লিখ।
অথবা, “গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণ একে অপরের পরিপূরক” -ব্যাখ্যা কর।
অথবা, গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণের মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনা কর।
অথবা, গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থায় জনগণের নিয়ন্ত্রণ এবং অংশ গ্রহণকে নিশ্চিত করে। বিকেন্দ্রিক প্রশাসনে সাধারণ জনগণ স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারে এবং তারাও নিজেদের প্রশাসন ব্যবস্থা অবিচ্ছেদ্য অংশস্বরূপ মনে করে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, বিকেন্দ্রীকরণ নীতি কার্যকরভাবে গণতান্ত্রিক ভাবধারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণের মধ্যে সম্পর্ক : গণতন্ত্র এবং বিকেন্দ্রীকরণ একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অংশ হিসেবে বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থা সর্বদাই গণতন্ত্র বিকাশে সহায়তা করে থাকে। নিম্নে গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণের মধ্যে সম্পর্ক উল্লেখ করা হলো :
১. জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ : প্রশাসন যেখানে মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে ন্যস্ত থাকে সেখানে সাধারণ জনগণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারে না। যা, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অন্যতম শর্ত। কিন্তু বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থা প্রশাসনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এবং তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণেও বিশেষ ভূমিকা পালন করার সুযোগ পায়।
২. গণতন্ত্রের রূপকার: বিকেন্দ্রীকরণের ফলে সকলের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা পায় এবং এটা গণতান্ত্রিক ভাবধারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ব্যবস্থায় স্থানীয় লোকের সাথে অন্তরঙ্গভাবে মেলামেশা করার ফলে স্থানীয় কর্মচারীগণ গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার প্রতি নতুন ধরনের সংবেদনশীলতা অর্জন করে।
৩. স্থানীয় নেতৃত্ব তৈরি : বিকেন্দ্রীকরণ রাজনৈতিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতির উন্নয়ন সাধন করে। জনপ্রতিনিধিত্বের কারণে স্থানীয় জনগণ নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে আগামী দিনে স্থানীয় প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব, যা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য।
৪. কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যভার লাঘব করে : বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার অনেক দায়িত্ব আঞ্চলিক ও স্থানীয় পর্যায়ে হস্তান্তর করে। ফলে তার দায়িত্ব কিছুটা লাঘব হয়। তারা সংগঠনের উন্নতিকল্পে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ও পকিল্পনার বিষয়ে বেশি সময় ব্যয় করতে পারেন। ফলশ্রুতিতে কেন্দ্রীয় সরকার অন্যান্য কাজে মনোযোগী হতে পারে।
৫. জবাবদিহিতা : বিকেন্দ্রীকরণ নিম্ন পর্যায়ের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। বিকেন্দ্রীকরণের ফলে সমাজের সকলের অংশগ্রহণ মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হওয়ার সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক ও দায়িত্বশীল হয়, যা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, গণতন্ত্র ও বিকেন্দ্রীকরণ একই সূত্রে গাথা। বিকেন্দ্রীকরণ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন ভৌগোলিক এলাকা থেকে রাজনৈতিক, ধর্মীয়, জাতিগত তথা সমাজের সকলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।বিবেকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণ সহজেই প্রশাসনের সান্নিধ্যে আসতে পারে এবং জনকল্যাণ পেতে পারে। গণতান্ত্রর উদ্দেশ্যই জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b7%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*