উন্নয়নে নারী’ নীতিমালার (WID) সীমাবদ্ধতাসমূহ কী কী?
অথবা, “উন্নয়নে নারী” নীতিমালার (WID) সীমাবদ্ধতা বলতে কী বুঝ?
অথবা, “উন্নয়নে নারী” নীতিমালার (WID) সমস্যাসমূহ লিখ।
অথবা, “উন্নয়নে নারী” নীতিমালার (WID) সীমাবদ্ধতাসমূহ লিখ।
অথবা, “উন্নয়নে নারী” নীতিমালার (WID) ত্রুটিসমূহ লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : সত্তরের দশকে আধুনিকায়ন তত্ত্বের সমালোচনার ধারায় উন্নয়নে নারী (WID) নীতিমালার উদ্ভব। এ নীতিমালা অনুযায়ী ধরে নেয়া হয় যে নারীর সম্পদ, দক্ষতা ও সুযোগের অভাবের দরুন উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত নয়। তাই তাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। উন্নয়নে নারী নীতিমালা তাই প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রশাসনিক পরিবর্তনের মাধ্যমে নারীকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পর্কিত করার উপর জোর দেয়।
উন্নয়নে নারী নীতিমালার সীমাবদ্ধতা : উন্নয়নে নারী নীতিমালার WID-এর সীমাবদ্ধতা নিম্নরূপ :
১. উন্নয়নে নারী নীতিমালা এমন ধারণা পোষণ করে যে, নারীরা উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত নয়।
২. প্রচলিত বৈষম্যমূলক সামাজিক কাঠামোকে মেনে নেয়। কখনই নারী প্রচলিত অধস্তনতার উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে না।
৩. সংঘাতহীন, আপসকামী মনোভাব পোষণ করে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে নারীরা পুরুষের সমান উপকৃত না হওয়ার কারণ উদ্ঘাটনে উদ্যোগী হয় না।
৪.নারীর দারিদ্র্য ও অধস্তন অবস্থার মূল কারণস্বরূপ পিতৃতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করে না।
শ্রেণি, বর্ণ, ধর্ম, সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে নারীদের একটা আলাদা বা বিচ্ছিন্ন গ্রুপ হিসেবে দেখা হয় এবং
৫.বিচ্ছিন্নভাবে নারীর চাহিদা পূরণ করারও চেষ্টা করা হয়।
৬. নারীর জীবনের উৎপাদনশীল দিকের উপর বেশি জোর দেয়া হয়। কিন্তু নারীর প্রজনন বা পুনঃউৎপাদনমূলক ভূমিকাকে অবমূল্যায়ন করা হয়।
৭. নারীর গার্হস্থ্য কাজ ও দায়িত্বের বোঝা লাঘব না করেই তাদের শ্রমের বাজারে ঠেলে দেয়া হয়।
৮. সম্পদের অপর্যাপ্ততা এবং নারীর অনভিজ্ঞতার প্রশ্ন তুলে নারী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরিধিকে প্রায়শই সীমিত করা হয়।
৯. ধরে নেয়া হয় যে নারীরা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অংশীদার হলে নারীর বিদ্যমান অধস্তন অবস্থা আপনা-আপনি পরিবর্তন হবে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায়, শত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও উন্নয়নে নারী নীতিমালাই প্রথম নারী উন্নয়ন নীতি । এটা উন্নয়ন তত্ত্ব ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে নারী ইস্যুটিকে মূর্তভাবে সামনে নিয়ে আসে।