উত্তম সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর গুণাবলি আলোচনা কর ।

অথবা, উত্তম সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর ৫টি শর্তাবলি লিখ।
অথবা, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর ৫টি গুণাবলি ব্যাখ্যা কর ।
অথবা, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর গুণাবলিসমূহ বিশ্লেষণ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
সমাজ গবেষণায় উত্তরদাতার নিকট থেকে সরাসরি প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহের একটি অত্যন্ত কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হচ্ছে সাক্ষাৎকার। সাক্ষাৎকার সফলভাবে সমাধান করার জন্য সাক্ষাৎ গ্রহণকারীর ব্যক্তিগত কিছু কিছু গুণাবলি থাকা জরুরি বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ একজন উত্তম সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর কতগুলো শর্ত অনুসরণ করে চলতে হয় ।
১. বুদ্ধিমত্তা ও শিক্ষা : সাক্ষাৎকার গ্রহণ একটি কৌশলগত বিষয় । এ কারণে প্রশ্নকারীকে অবশ্যই পর্যাপ্ত জ্ঞান ও শিক্ষা এবং বুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। কেননা, যেকোনো সাক্ষাৎকার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা, প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি অর্জনের ক্ষেত্রে শিক্ষা ও বুদ্ধিমত্তা প্রাথমিক বিবেচ্য বিষয় হিসেবে কাজ করে ।
২. সততা : সাক্ষাৎকারীকে তার কাজের প্রতিটি স্তরে সততা অবলম্বন করা উচিত। এ সততা একদিকে যেমন উত্তরদাতার আস্থা ও সহযোগিতা অর্জনে আবশ্যক, তেমনি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্যার্জনেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ পেশাগত দায়িত্ব ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সাক্ষাগ্রহণকারী সংগত কারণে সততার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকেন।
৩. সঠিকতা : সাক্ষাৎগ্রহণকারীকে উত্তরদাতার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাবলি সঠিকভাবে ধারণ করার ক্ষমতা অর্জনে সমর্থ হতে হবে। পাশাপাশি নির্ধারিত প্রশ্ন যথাযথভাবে তুলে ধরতেও তাকে যোগ্য হতে হবে। পেশাগত দায়িত্ব, নির্দেশিকা, নীতিমালা ইত্যাদি তাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে ।
৪. ব্যক্তিত্ব ও মেজাজ-মর্জি : সাক্ষাৎকারে প্রশ্নকর্তা এবং উত্তদাতার মধ্যে যে সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়, সেখানে সাক্ষাগ্রহণকারীকে অবশ্যই ভারসাম্যপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ও মেজাজ-মর্জির পরিচয় বহন করতে হয়। সেজন্য এখানে আনন্দঘন অথচ আনুষ্ঠানিক সম্পর্কই বেশি কাঙ্ক্ষিত ।
৫. আগ্রহ : গবেষণার উদ্দেশ্যার্জনে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাক্ষাগ্রহণকারীর যথেষ্ট আগ্রহ ও সদিচ্ছা
থাকা প্রয়োজন । কেননা, আগ্রহের মাত্রা সংগৃহীত তথ্যের ভ্রান্তির পরিমাণ হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ।
৬. বিশেষ দক্ষতা : সাক্ষাগ্রহণকারীকে কিছু কিছু বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হয়। যেমন- উত্তরদাতার সাথে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা, উপযুক্ত প্রশ্নকরণ, সঠিক উত্তর আদায় ও তা ধারণ এবং পক্ষপাতমুক্ত থাকা ইত্যাদি ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক ও দক্ষ হতে হয়।
৭. উপযুক্ত প্রস্তুতি গ্রহণ : সাক্ষাৎকার গ্রহণে সঠিক সময়, স্থান এবং বাক্য উপস্থাপনে প্রশ্নকারীকে প্রজ্ঞাপূর্ণ হতে হয়। কারণ, কতক্ষণ ব্যাপী, কোথায় এবং কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে প্রয়োজনীয় তথ্য উত্তরদাতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে প্রশ্নকারী যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় রাখতে পারেনি। এমনকি কোন পোশাক পরিধান করে তিনি উত্তরদাতার সামনে উপস্থিত হবেন সে বিষয়েও তাকে অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ হতে হয়।
৮. সামঞ্জস্য প্রস্তুতি গ্রহণ : সাক্ষাগ্রহণকারীকে অবশ্যই গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রণীত প্রশ্নাবলি এবং নানান শ্রেণির উত্তরদাতার সাথে খাপখাইয়ে নিতে সক্ষম হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আবেগ দমন করে গবেষণার উদ্দেশ্যার্জনের লক্ষ্যে সামঞ্জস্য বিধান ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে তাকে সচেষ্ট হতে হবে। কেননা, প্রশ্ন এবং উত্তরদাতাদের ধরন সর্বক্ষেত্রে বৈচিত্রতাপূর্ণ হয়ে থাকে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সাক্ষাৎকার সর্বতোভাবে সফল করে তুলতে হলে প্রয়োজন সঠিক উত্তরদাতা নির্বাচন এবং সুকৌশলে তার সহযোগিতা নিশ্চিত করে অভীষ্ট তথ্যাবলি সংগ্রহ করা। এক্ষেত্রে সাক্ষাগ্রহণকারী একজন সার্বিক পরিচালকের ভূমিকা পালন করে থাকেন ।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*