Answer

উইমেন্স স্টাডিসের গবেষণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর।

অথবা, উইমেন্স স্টাডিসের বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতির বিবরণ দাও।
অথবা, উইমেন্স স্টাডিসের গবেষণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর।
অথবা, উইমেন্স স্টাডিসের গবেষণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন পদ্ধতিগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, উইমেন্স স্টাডিসের বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে যা জান লিখ।
অথবা, উইমেন্স স্টাডিসের বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি উল্লেখ কর।
উত্তরায় ভূমিকা :
অনুসন্ধানের সকল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি উইমেন্স স্টাডিসে প্রযোজ্য এবং স্থান-কাল-পাত্র ভেদে এসব পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে উপযোগিতা, বস্তুনিষ্ঠতা এবং ফলপ্রসূতার নিরিখে যে পদ্ধতিটি অধিক জনপ্রিয়, সেটি হলো অংশগ্রহণ পদ্ধতি অর্থাৎ, যিনি গবেষণা করেন বা গবেষক ও তার গবেষণার লক্ষ্যবস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর পরস্পরের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ। উদাহরণস্বরূপ, পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকের জীবনের উপর গবেষণা করার জন্য গবেষক ঐ শিল্পের নারী শ্রমিকদের কাছে যান, তাদের সাথে মেলামেশা করেন, তাদের কাজকর্ম পর্যবেক্ষণ করেন, তাদের সাথে কথা বলেন, তাদের বাড়িতে এবং কর্মস্থলে গিয়ে তাদের জীবন সম্পর্কে সকল তথ্য সরাসরি জানেন।
উইমেন্স স্টাডিসের গবেষণার পদ্ধতি : স্বাভাবিক এবং বাস্তব পরিবেশে দু’জন গবেষক ও সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে ভাব, ভাষা ও তথ্যের দ্বিমুখী আদান প্রদান ঘটে। ফলে গবেষণার ফল ও সিদ্ধান্ত বস্তুনিষ্ঠ এবং জীবনের কাছাকাছি এসে যায়। তাছাড়া এমন কতকগুলো ব্যক্তিঘটিত ও ব্যক্তিগত বিষয় আছে, যেগুলোতে অংশগ্রহণ ব্যতীত গবেষণার গত্যন্তর নেই। নিম্নে উইমেন্স স্টাডিসের গবেষণার পদ্ধতিসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. কর্মশালা ও দলীয় আলোচনা : গবেষণার পদ্ধতিতে কর্মশালা ও দলীয় আলোচনা অন্যতম শর্ত। এ প্রক্রিয়ায় গবেষক আলোচনার সূত্র ধরে দেয় এবং অংশগ্রহণকারীরা মূল আলোচনা চালিয়ে যান, যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর মতামত ও সমস্যাগুলো বেরিয়ে আসে। আলোচকদের বিভিন্ন মতামত ও সমস্যা চিহ্নিতকরণ পর্যালোচনা এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে গবেষক সিদ্ধান্তে পৌঁছে যান।
২. জীবনবৃত্তান্ত : যে কোনো গবেষণা পদ্ধতিতে গবেষণার অন্যতম উপাত্ত হলো জীবনবৃত্তান্ত বা জীবন ইতিহাস। এ প্রক্রিয়ায় গবেষক তার গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বা জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে কার্যোপযোগী প্রতিনিধি নির্বাচন এবং তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ স্থাপন করেন। অনেকক্ষেত্রে গবেষক তাদের সাথে বাস করেন, তাদের পরিবারের সদস্য হয়ে মিশে যান, তাদের সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে ক্রিয়াপ্রতিক্রিয়া করেন, তাদের অতীত জীবন ও অভিজ্ঞতা জানেন এবং বর্তমান অভিজ্ঞতা অনুধাবন করেন।
৩. সংশ্লিষ্টদের থেকে তথ্য : উইমেন্স স্টাডিস গবেষণা করতে সংশ্লিষ্ট মহিলাদের বিবৃতি ও রচনা প্রয়োজন হয়। ব্যক্তি বিশেষের রোজনামচা, পত্রাদি এবং কাব্য তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং বিশ্বাস তথা মতামতের প্রতিফলন। এ ধরনের গবেষণা খুবই বাস্তব এবং কৃত্রিমতা বর্জিত হয়ে থাকে।
৪. কাহিনীর সার্বিক মূল্যায়ন : অবিচ্ছিন্ন মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে গবেষক ঐ প্রতিনিধিদের সমগ্র জীবনের একটি পূর্ণ চিত্র, পূর্ণ বিবরণ রচনা করেন। এক কথায় তাদের জীবনের ইতিহাস তথা জীবন কাহিনী নিবদ্ধ করেন। এ কাহিনী থেকে তার গবেষণার বিষয়বস্তু সম্পর্কে তথ্য ও সিদ্ধান্ত উদ্ঘাটিত হয়। গবেষণাকে বস্তুনিষ্ঠ করতে গবেষকের উক্ত বিষয়ের জীবন কাহিনীকে সংক্ষিপ্ত করতে হয়।
৫. গবেষণার সমন্বয় : অসুবিধাগুলো দূর করার উদ্দেশ্যে কেউ কেউ অংশগ্রহণ গবেষণার সাথে কার্যক্রম গবেষণার সমন্বয়ের কথা বলেন। নারী উন্নয়নে সরকার, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি সরকার ও প্রতিষ্ঠানের পর্যায়ে উন্নয়নশীল দেশে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পগুলোর সময়সীমা তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ এবং উদ্দীষ্ট জনগোষ্ঠীর আকার বেশ বড়। এগুলোর বাস্তবায়নে সাধারণত স্থানীয়ভাবে জনশক্তি নিয়োগ হয়, যারা শিক্ষায় পেশাজীবী গবেষকদের চেয়ে অনেক খাটো।
৬. সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী বা ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ : গবেষণাকে সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ করতে ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর সাথে আদানপ্রদান করা বাঞ্ছনীয়। তবে অংশগ্রহণ পদ্ধতির কতিপয় অসুবিধা আছে। বিশ্বাসযোগ্যতা ও ব্যাপকভিত্তিক উপাত্ত সংগ্রহের জন্য যত সময় দেয়া প্রয়োজন এবং যত সংখ্যক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর সাথে আদানপ্রদান করা বাঞ্ছনীয় অধিকাংশ গবেষকের পক্ষে তা করা সম্ভব হয় না। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে গবেষণা করা হয়।
৭. গবেষক ও উদ্দীষ্ট গোষ্ঠীর সুসম্পর্ক : প্রকল্প বাস্তবায়নকারীর এসব লোকবল উদ্দীষ্ট গোষ্ঠীর সাথে গভীরভাবে মিলেমিশে কাজ করে। ফলে এদের বিশ্বাসযোগ্যতা বেশি এবং উদ্দীষ্ট গোষ্ঠীর সাথে ব্যবধান কম থাকে। এদের মাধ্যমে গবেষণা চালালে এবং পেশাজীবী গবেষকগণ এদের সহায়তায় উদ্দীষ্ট গোষ্ঠীর সাথে সংযোগ এবং সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠা করলে বাস্ত বধর্মিতা ও ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে।
উপসংহারঃ উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা ও সংকট, কাঠামোগত সমন্বয় নীতি এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যা ও পরিবেশ নারীর জীবন ও জীবিকাকে কিভাবে

করে এবং কিভাবে জেন্ডার সমতাকে এসব সমস্যা ও পরিবেশের সমাধানে মুখ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা যায় নারী শিক্ষা তা নিয়ে গবেষণা করে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!