Answer

ইহার পর মূর্খতা আমরা আর দেখি না।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিরচিত ‘বাঙ্গালা ভাষা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে প্রাবন্ধিক যে সকল পণ্ডিত সংস্কৃতের সাথে সম্বন্ধশূন্য শব্দসমূহকে বাংলা রচনায় গ্রহণ করতে সম্মত নন তাদেরকে মূর্খ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিশ্লেষণ : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘বাঙ্গালা ভাষা’ প্রবন্ধে তিন রকমের বাংলা শব্দের উল্লেখ করেছেন। এর প্রথম শ্রেণি হচ্ছে সে-সকল সংস্কৃত শব্দ যা রূপান্তরিত হয়ে বাংলায় ব্যবহৃত হয়। দ্বিতীয় শ্রেণি হচ্ছে সে-সকল সংস্কৃত শব্দ যা রূপান্তরিত না হয়েই বাংলায় ব্যবহৃত হয় এবং তৃতীয় শ্রেণি হচ্ছে যে-সকল শব্দের সাথে সংস্কৃত শব্দের কোন সম্পর্ক নেই; যেমন- ঢেঁকি, কুলা, স্কুল, কলেজ, কাগজ প্রভৃতি। সংস্কৃতসেবী লেখকদের এহেন মানসিকতাকে লেখক মূর্খতা বলে আখ্যায়িত করেছেন। এরা গোঁড়া, অন্ধ ও মূর্খ। এদের কূপমণ্ডুকতা বাংলা ভাষার গতিকে রুদ্ধ করেছিল। যদি কোন ইংরেজের অর্থভাণ্ডারে হালি এবং বাদশাহী দুই প্রকার মোহর থাকে এবং সে-ইংরেজ যদি জাত্যাভিমানের বশ হয়ে বিবির মাথাওয়ালা কম দামী মোহর রেখে ফারসি লেখা বেশি দামী মোহরগুলো ফেলে দেয় তবে সে ইংরেজকে মূর্খ বলা ছাড়া আর উপায় নেই। আমাদের সংস্কৃতসেবী পণ্ডিতরাও সে ধরনের মূর্খ ছিলেন।
মন্তব্য : সংস্কৃতসেবী পণ্ডিতরা কূপমণ্ডুকতায় ভুগতেন। তাঁদের গোঁড়ামি ও অন্ধত্ব বাংলা ভাষার স্বাভাবিক গতিকে থামিয়ে দিয়েছিল। এ ধরনের মানসিকতা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!