ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থায় নারীর মর্যাদা সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, ইসলামি শিক্ষা নারীকে কী মর্যাদা দিয়েছে?
অথবা, ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থায় নারীর মর্যাদা বর্ণনা কর।
অথবা, ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থায় নারীর মর্যাদা সম্পর্কে যা জান লিখ।
অথবা, ইসলামি শিক্ষায় নারীর মর্যাদা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
উত্তর৷ ভূমিকা : পৃথিবীতে ইসলামের পূর্বে যত সভ্যতা বিকাশ লাভ করেছে সব সভ্যতাই নারীকে ছোট করে দেখেছে। একমাত্র ইসলামই এ অবস্থা থেকে বের হয়ে এসে নারীদেরকে সম্মানের পাত্র হিসেবে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদা দিয়েছে। ইসলাম শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সম্পত্তিসহ সকল ক্ষেত্রে নারীকে দিয়েছে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে যাতে নারী সমাজ সব বাধা পেরিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। নিম্নে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইসলাম নারীকে যে মর্যাদা দিয়েছে তা আলোচনা করা হলো :
শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীর মর্যাদা : জ্ঞান অর্জন করার ব্যাপারে ইসলাম নারীকে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করেছে। কারণ নারী হলো সমাজের বিশেষ একটি অংশ। নারীরা পুরুষের পাশাপাশি সহযোগী হিসেবে কাজ করবে আর তার জন্য প্রথম যা প্রয়োজন তাহলো শিক্ষা। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। এ কথা মুসলমানগণ বুঝতে পেরেছিল বলেই শিক্ষার ব্যাপারে নারীর অবাধ স্বাধীনতা প্রদান করে রাসূল (স) বলেছেন, “বিদ্যার্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর ফরজ। যদি এটা (জ্ঞান) অর্জন করার জন্য চীন দেশ পর্যন্ত যেতে হয় ।” ইসলামে ফরজ ইবাদতের পর সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত হলো জ্ঞানার্জন । তাই মহানবী (স) বলেছেন, “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন কর।” বিদ্যা অর্জনের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, পাঠ কর তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন, পাঠ কর আর তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। (সূরা আলাক-১,৩,৪ আয়াত) শিক্ষার মাধ্যমেই যুগে যুগে অনেক নারী পুরুষের চেয়ে অধিক মর্যাদাবান হয়েছে। অনেক সাহাবী ও তাবেয়ী হযরত আয়েশা (রা) এর নিকট হতে হাদিস তাফসীর ফিকাহ শিক্ষা গ্রহণ করতে আসতেন। সে সূত্র ধরে আজ নারীরা শিক্ষা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। মহানবী (স) শুধু নারী শিক্ষার জন্য দাস দাসীদের শিক্ষার
ব্যাপারেও যথেষ্ট উৎসাহ প্রদান করেছেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, শিক্ষা একটি জাতির জন্য অপরিহার্য বিষয়। তাই ইসলাম নারী শিক্ষার প্রতি এত গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলাম যেভাবে নারী শিক্ষার সমানাধিকার দিয়েছে তা যদি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় তাহলে শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য থাকবে না।