Answer

ইন্দ্রিয়ের পঞ্চপ্রদীপ জ্বেলে জীবন সাধনারই অপর নাম কালচার।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু চিন্তাশীল প্রাবন্ধিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বিরচিত ‘সংস্কৃতি কথা’ প্রবন্ধের অন্তর্গত।
প্রসঙ্গ : সংস্কৃতি কি তা বিশ্লেষণ করে বুঝাতে গিয়ে প্রাবন্ধিক উল্লিখিত সিদ্ধান্তমূলক মন্তব্যটি করেছেন ।
বিশ্লেষণ : আমাদের সমাজে সাধারণ মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রিত করে ধর্ম আর শিক্ষিত ও মার্জিত মানুষের জীবন পরিচালিত হয় সংস্কৃতির দ্বারা। ধর্ম সাধারণত ইন্দ্রিয় সাধনার পরিপন্থী। অথচ ইন্দ্রিয়ের পঞ্চপ্রদীপ জ্বেলে জীবনসাধনারই অপর নাম কালচার বা সংস্কৃতি। মন ও আত্মার সাথে চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বকের যোগযুক্ত নবজন্মদানই কালচারের উদ্দেশ্য। অবশ্য এ পঞ্চইন্দ্রিয়ের সব কটাই যে সমমূল্যমানের তা নয়। এদের মধ্যে চোখ আর কানই সেরা। তাই বলার সময় এদেরকেই আগে বলা হয়ে থাকে। চোখের মানে ছবি সাধনা আর কানের সাধনা গানের। সাহিত্যের মধ্যে চোখ ও কান উভয়েরই কাজ রয়েছে কেননা তা ছন্দ ও ছবির উভয়ের মিলন। চোখ ও কানের পর নাসিকার স্থান। নিশ্বাস গ্রহণের সহায়তায় বাঁচার সুযোগ দেয়ার জন্য নয়, সুগন্ধ উপলব্ধির দ্বারা আত্মাকে প্রফুল্ল রাখার সুযোগ দেয় বলে তার এ মর্যাদা। চোখ ও কান আত্মার জিহ্বা- এ দু’য়ের মাধ্যমে সে তার খাদ্য চয়ন করে। অথচ ভাবলে অবাক হতে হয়, কোন কোন ধর্ম এ চোখ ও কানের সাধনার পরিপন্থী। এখানে তারা পতনের ফাঁদ ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না। তাই সাধারণ মানুষ চোখ থাকতেও কানা, কান থাকতেও কালা। সুর ও ছবির সূক্ষ্মতা তাদের প্রাণে দাগ কাটে না। চোখ ও কানের প্রতি বেখেয়াল থাকা যে আত্মার অপমান করা সংস্কৃতিবান মানুষ মাত্রেই তা জানে। সুতরাং পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের পঞ্চপ্রদীপ জেলে জীবন সাধনারই অপর নাম কালচার। এ সত্য সকলকে মেনে নিতে হবে।
মন্তব্য : ইন্দ্রিয়কে বাদ দিয়ে সংস্কৃতিবান হওয়া যাবে না এবং সংস্কৃতি চর্চাও সার্থক হবে না।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!