ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের অংশগ্রহণের গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের অংশগ্রহণের গুরুত্ব উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গুলোর মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সবাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হলো ইউনিয়ন পরিষদ । গ্রামীণ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, সু-শাসন প্রতিষ্ঠা স্থানীয় শাসন প্রতিষ্ঠা, শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটানো, স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দ্বারা সু-শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কাজেই ইউনিয়ন পরিষদ নাগরিকদের কল্যাণ এবং স্থানীয় উন্নয়নে যে সকল কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে,তার জন্য প্রথম এবং প্রধানত প্রয়োজন জনগণের অংশগ্রহণ।
ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের অংশগ্রহণের গুরুত্ব : নিচে ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের অংশগ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. নাগরিক চেতনা বৃদ্ধি পায় : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটদান ও ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে নাগরিক চেতনা বৃদ্ধি পায়। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সাধারণ জনগণের কার কি অধিকার ও কর্তব্য সে সম্পর্কে সকলেই সজাগ হয়ে উঠে। সাধারণ জনগণ ভাবতে শিক্ষে ইউনিয়ন পরিষদ তাদের বিপদ-আপদের কাণ্ডারি, সুখ-দুঃখের সাথী, এটি তাদের কল্যাণে নিয়োজিত । সুতরাং নিজেদের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদকে গতিশীল ও প্রাণবন্ত করো আমাদের সকলের পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য।
২. সুনাগরিকতার বিকাশ : ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে জনগনের অংশগ্রহণের ফলে জনগণের মধ্যে সুনাগরিকতার বিকাশ ঘটে। জনগণের মধ্যে সহিষ্ণুতা, সহনশীলতা, আত্মসংযম, পরমত সহিষ্ণুতা প্রভৃতি মানবিক গুণাবলি বিকশিত হয়।
৩. নেতৃত্বের বিকাশ : ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণের ফলে সমস্যা চিহ্নিত করার ও সমাধান করার চিন্তা-ভাবনা থেকে তাদের মধ্যে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটতে শুরু করে।
৪. অপতৎপরতা বন্ধে : বাংলাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ের জনগণ সাধারণতদ নির্বিকার ও উদাসীন প্রকৃতির। তাদের উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে টাউট ও দালাল প্রকৃতির লোকের সাধারণ মানুষের সুবিধাকে নিজেরা ভোগ করার সুযোগ গ্রহণ করে। ইউনিয়ন পরিষদে এ অপতৎপরতা বন্ধে স্থানীয় জনগণকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে সঠিক মাত্রায় অংশগ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন
৫. সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে : বাংলাদেশে ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধিদের সচ্ছতা ও জবাব দিহিতা নেই বললেই চলে। তারা একবার নির্বাচিত হলে দায় সারা গোছের দায়িত্ব পালন করে মেয়াদ শেষ করেন। এরূপ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদে সচ্ছতা ও জবাব দিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে জনগণকে অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন ।
৬. গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা : ইউনিয়ণ পরিষদে জনগণের সরাসরি, সক্রিয় ও কার্যকর সম্পৃক্ততার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
৭. নাগরিক বৃদ্ধির বিকাশ : ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিনিধিগণ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, দল মত, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের বিভিন্ন ধরনের দাবি-দাওয়া ও অভাব অভিযোগের সম্মুখীন হন।এক্ষেত্রে নিজস্ব বিবেক, বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগের দ্বারা সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হবার মাধ্যমে নাগরিক বুদ্ধির বিকাশ ঘটে।
৮. দেশপ্রেম সৃষ্টি হয় : ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণ সরকারি কাজে সেচ্ছায অংশগ্রহণের মনোভাব লাভ করে যা জনমণে দেশপ্রেম সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের অংশগ্রহণ যত বৃদ্ধি পাবে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ততবেশি সুসংসহশ হবে। কাজেই বলা যায়, স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণমূলক সহযোগিতাই গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করবে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b7%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*