ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলিসমূহ উল্লেখ কর।


অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা আলােচনা কর।
অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলি আলােচনা কর।
অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যসমূহ কী কী?
অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলির বর্ণনা দাও।
অথবা, ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা উল্লেখ কর।
ভূমিকা :
পল্পি এলাকার সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে পল্লির শ্রীবৃদ্ধি সাধন, গণসচেতনতা ও দায়িত্বশীল নেতৃত্ব বিকাশের লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলিসমূহ : বাংলাদেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলাে গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে এবং সরকারের এজেন্সি হিসেবে বহুবিধ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করে। ইউনিয়ন পরিষদের উল্লেখযােগ্য কার্যাবলিসমূহ নিম্নরূপ-
১. জনকল্যাণমূলক কাজ : ইউনিয়ন পরিষদের মূল কাজই হচ্ছে ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়ন করা। ইউনিয়ন পরিষদ জনকল্যাণের নিমিত্তে রাস্তাঘাটের সংরক্ষণ ও আলাের ব্যবস্থা, খেলার মাঠ, উদ্যান, গােরস্তান এবং শশান নির্মাণ ও তত্ত্বাবধান, সাধারণ সম্পত্তির তত্ত্বাবধান, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য কূপ, নলকূপ, পুকুর-পুষ্করিণী, ট্যাংক খনন ও সংরক্ষণ, জন্ম-মৃত্যুর রেজিস্ট্রিকরণ, বন্যা, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মােকাবিলা, এতিম ও দুঃস্থ ও বিধবাদের সাহায্য প্রদান, এতিমখানা পরিচালনা এবং অন্যান্য বহুবিধ সেবা ও কল্যাণমূলক কার্যাবলি সম্পাদন করে।
২. উন্নয়নমূলক কাজ : ইউনিয়ন পরিষদের মূল কাজই হচ্ছে ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়ন করা। এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ গ্রামীণ অবকাঠামাে, রাস্তাঘাট নির্মাণ, মেরামত ও রাস্তাঘাটের উভয় পাশে ও মুক্ত স্থানে বৃক্ষরােপণ ও সংরক্ষণ, গ্রামীণ শিল্পের প্রসার করা, বনজ সম্পদ সংরক্ষণ ও পশুপালন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। তাছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, কালভার্ট নির্মাণ ও সেচের ব্যবস্থা করে।
৩. শান্তি রক্ষামূলক কাজ : ইউনিয়ন পরিষদ গ্রামে চোর-ডাকাতের আক্রমণ ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, গ্রামীণ পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন ও পরিচালনা করে থাকে।
৪. শিক্ষামূলক কাজ : ইউনিয়ন পরিষদ কিছু কিছু শিক্ষামূলক কাজও করে থাকে। ইউনিয়নের গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বই ও বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থাসহ শিক্ষার উন্নতিকল্পে পাঠাগার ও লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা, বয়স্ক ও নিরক্ষরদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা ইউনিয়ন পরিষদের কাজ।
৫. বিচার সংক্রান্ত কার্যাবলি : ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়নের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য ছােট ছােট বিবাদের মীমাংসা করে । গ্রামীণ এলাকায় শান্তি ও সম্প্রীতি সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে সরকার সম্প্রতি গ্রাম্য আদালত গঠন।করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। গ্রাম্য আদালতগুলাে ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠিত হবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিবাদের পক্ষগণ কর্তৃক মনােনীত চারজন সদস্যসহ মােট পাঁচজন সদস্য নিয়ে গ্রাম্য আদালত গঠিত হবে। গ্রাম্য আদালত হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার এখতিয়ার থাকবে। পাঁচ হাজার টাকা দাবি বিশিষ্ট দেওয়ানি ও ছােট ছােট ফৌজদারি মামলা গ্রাম্য আদালতে নিষ্পত্তি হবে।
উপসংহার : উপযুক্ত কাজগুলাে ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ জনস্বাস্থ্যমূলক, কৃষি উন্নয়নমূলক, রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত, বিনােদনমূলক বিবিধ কাজ করে থাকে ।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*