আমি মানবসমাজে নূতন নীতি প্রচার করিতে আসি নাই, সমাজ ভাঙিতে আসি নাই, বন্ধন ছিঁড়িতে চাই না।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বাংলা সাহিত্যে সার্থক ছোটগল্পের স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘একরাত্রি’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে সংগৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : সুরবালা নায়কের হৃদয়ে নতুন করে যে অনুভূতির জন্ম দিয়েছে তা সামলাতে নায়ক এ মন্তব্যটি করেছে।
বিশ্লেষণ : নায়কের চিত্ত চাঞ্চল্যের একটি বিশেষ রূপ এখানে ধরা পড়েছে। নায়ক দেশোদ্ধারের কাজে ব্যস্ত থাকায় সুরবালার সাথে তার বিয়ের প্রস্তাব অবজ্ঞাভরে উপেক্ষা করেছিল। কেউ কারও জন্য চিরকাল অপেক্ষা করে না। সুরবালাও করেনি। তার বিয়ে হয়ে যায় উকিল রামলোচন রায়ের সাথে। ঘটনাক্রমে নায়ক স্কুল মাস্টারির চাকরি নিয়ে আসে নোয়াখালীর একই অঞ্চলে। একদিন রামলোচন রায়ের বাড়িতে গল্প করতে গিয়ে নতুনভাবে অনুভব করে বাল্যসখী সুরবালাকে। সুরবালা তার হৃদয়ের বন্ধ অর্গল খুলে দেয়। সুপ্ত প্রেম আবার উজ্জীবিত হয়ে উঠে। সুরবালাকে সে শৈশবের মতো করে পেতে চায়। কিন্তু সে পথ আজ বন্ধ। সে আজ রামলোচন রায়ের বিবাহিতা স্ত্রী। নায়ক জানে আজ তাকে দেখা নিষেধ, তার সাথে কথা বলা দোষ, তার বিষয়ে চিন্তা করা পাপ । তবুও নায়কের মন বিদ্রোহী হয়ে উঠে। সামান্য কয়টি মন্ত্র পড়ে রামলোচন সুরবালাকে লাভ করেছে; আর সে যে সমস্ত হৃদয় দিয়ে সুরবালাকে অনুভব করে তার কি কোন মূল্য নেই। নায়ক জানে সমাজের কাছে তার এ হৃদয়ানুভূতি মূল্যহীন, তবুও এটিই তার হৃদয়ের কথা।
মন্তব্য : নায়কের হৃদয়াবেগ প্রচলিত সমাজব্যবস্থার কঠোর শাসনকে উপেক্ষা করতে পারেনি।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!