Answer

আমি কবি, অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করবার জন্য, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : উদ্বৃত অংশটুকু সত্যনিষ্ঠ সৃজনশীল প্রাবন্ধিক কাজী নজরুল ইসলামের ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত
প্রসঙ্গ : কঠিন সত্য ও বাস্তবচিত্র উপস্থাপনে প্রদত্ত অংশে কবির দৃঢ়তার কথাই প্রতিফলিত হয়েছে।
বিশ্লেষণ : অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন কবিই অপ্রকাশ্যকে প্রকাশ করতে পারেন, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদান করতে পারেন। সত্য উদ্ঘাটন এবং তা নির্ভয়ে প্রকাশ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। সৃষ্টিশীল মানুষের এ দুরূহ কাজ করার সাহস এবং মনোবল থাকে। কবি অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন এবং দৃষ্টিশীল একজন মানুষ। তিনি বুঝেছিলেন ব্রিটিশ রাজশক্তি এদেশের মানুষকে সত্য থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। ন্যায়বিচারের নামে প্রহসনের বিচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। জনকল্যাণের নামে প্রকারান্তরে শোষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার স্বার্থে প্রজাসাধারণের সাথে প্রতারণা করছে; যাতে জনগণ তাদের ধূর্ত মূর্তি আঁচ করতে না পারে, সাধারণ মানুষ যাতে ‘আধমরা’ থেকে যায়, কোনক্রমেই সচেতন হতে না পারে এবং আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠে রাজবিরোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা করে তুলতে না পারে। রাজার স্বাধীনতাবিরোধী ও ষড়যন্ত্রকারী মূর্তি কবি তাঁর সাহিত্যকর্ম ও বক্তৃতার মাধ্যমে ফাঁস করে দিয়েছেন। এটা কবির পবিত্র দায়িত্ব। স্রষ্টা এ অপ্রকাশ্য সত্য প্রকাশের দায়িত্ব কবিকে দিয়েছেন। কবি স্রষ্টার নির্দেশ পালন করে সাধারণ মানুষের স্বার্থে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। দুঃখী-দরিদ্র পরাধীন ভারতবাসীর অমূর্ত হৃদয়কে তিনি জাগিয়ে দিয়েছেন- মূর্ত করে তুলেছেন। এতে কবির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছে রাজশক্তি। কবিকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছে। কবির তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। তিনি তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পেরে গর্বিত ও সন্তুষ্ট।
মন্তব্য : এদেশের আপামর মানুষের কাছে রাজার অপকীর্তি অপকাহিনী যা কিছু অপ্রকাশ্য ছিল কবি তা তাদের কাছে প্রকাশ করে দিয়ে তাদের সচেতন করে তুলেছেন। এটাই তাঁর কাছে গর্বের ও অহংকারের।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!