উৎস : উদ্ধৃত অংশটুকু আদর্শবাদী প্রাবন্ধিক কাজী নজরুল ইসলামের ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে ।
প্রসঙ্গ : সত্যদ্রষ্টা ঋষির নীতি আদর্শের অনুসারী কবি আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজের প্রতি আস্থার কথাই এখানে উচ্চারণ করেছেন।
বিশ্লেষণ : উদার এবং মুক্তমনের অধিকারী কবির কাছে দেশ এবং দেশের মানুষই বড়। ন্যায় এবং সত্য প্রতিষ্ঠাই তাঁর ব্রত। জনগণের অধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠাই তাঁর অঙ্গীকার। সত্যদ্রষ্টা ঋষিদের কাছে মানবকল্যাণ এবং স্রষ্টার সত্য ন্যায় সুন্দরের বাণী ছিল মহান কর্তব্য ও আদর্শ। তেমনি কবি নিজেও সত্যের হাতের বীণা। তাঁর আত্মা সত্যদ্রষ্টা ঋষির আত্মা। সত্য ও শান্তির পথই তাঁর আদর্শপথ। এ পথ স্রষ্টাই তাঁকে অনুসরণ করতে আদেশ দিয়েছেন। ফলে ন্যায়-সত্য-সুন্দর সম্পর্কে তিনি সচেতন। কাজেই অন্যায়ভাবে কোনকিছু বিচার করা বা মেনে নেয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। কোন লোভের বশবর্তী হয়ে লাভের জন্য তিনি তাঁর নীতি ত্যাগ করবেন না। রাজার অগ্নিচক্ষু তাঁকে পরম কর্তব্য এবং সত্য থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। যা কিছু মিথ্যা, যাকে তিনি মিথ্যা বলে জেনেছেন তাকে স্বীকার করা নীতিভ্রষ্ট হওয়ারই সামিল। নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখে আপামর মানুষ তথা দেশকে হুমকির মুখে ফেলা কবির কাজ নয়। কবি তা পছন্দ করেন না। পরাধীনতার জিঞ্জিরমুক্ত করে দেশ ও মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করাই তাঁর অঙ্গীকার। রাজশক্তি তো সচেতন মানুষকে কব্জা করার জন্য লোভ-লালসা, ভয়-ভীতি দেখাবেই। কিন্তু সত্যদ্রষ্টা ও সচেতন কল্যাণকামী মানুষ তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। তাই কবি রাজার সমস্ত অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করেছেন। এসবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন।
মন্তব্য : প্রকৃতপক্ষে উদার, মুক্ত ও অধিকার সচেতন মানুষ কখনো কোন সূত্রেই শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপস করে না। কবিও তা করেননি।
আমি অন্ধ বিশ্বাসে, লাভের লোভে, রাজভয় বা লোকভয়ে মিথ্যাকে স্বীকার করতে পারি না। অত্যাচারকে মেনে নিতে পারি না।”- ব্যাখ্যা কর।
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079
Leave a Reply