Answer

আমার আয়ুর সমস্ত দিনরাত্রির মধ্যে সেই একটিমাত্র রাত্রিই আমার তুচ্ছ জীবনের একমাত্র চরম সার্থকতা।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বাংলা ছোটগল্পের রূপকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত ‘একরাত্রি’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : দুর্যোগকবলিত রাতে নায়ক তার দয়িতা সুরবালাকে কিছুক্ষণের জন্য কাছে পাওয়াটাকে তার তুচ্ছ জীবনের চরম সার্থকতা বলে অভিহিত করেছেন এই উক্তির মাধ্যমে।
বিশ্লেষণ : নোয়াখালীর সরকারি উকিল রামলোচন রায়ের বাড়িতে বসে গল্প করার সময় নায়ক তার বাল্যের সহচরী সুরবালার অস্তিত্ব হাড়ে হাড়ে টের পায়। তার অন্তরে আবার নতুন করে জায়গা দখল করে সুরবালা। শৈশবের সেই হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিভরা দিনগুলো আবার সক্রিয় হয়ে উঠে। যে সুরবালাকে সে ইচ্ছে করলেই সারা জীবনের জন্য দখল করতে পারত এখন তাকে দেখাও তার অন্যায়। সুরবালার কথা ভাবতে ভাবতে যখন নায়ক পাগল প্রায় সেই সময়ই এল এক অবিস্মরণীয় রাত। মহাদুর্যোগের এই রাতে নায়ক আত্মরক্ষার জন্য স্কুল সংলগ্ন পুকুর পাড়ের উঁচু ঢিবির উপর আশ্রয় নেয়। সুরবালার স্বামী রামলোচন সে রাতে বাড়িতে ছিল না। সুরবালাও এই দুর্যোগের মধ্যে আত্মরক্ষার্থে ঢিবির উপর এসে উপস্থিত হয়। তারা পরস্পর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকে। কেউ একটা কথাও বলতে পারে না। কুশলপ্রশ্নও করতে পারল না একে অপরকে। কেবল দু’জনে অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে রইল। তাদের পায়ের তলে গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ উন্মত্ত মৃত্যুস্রোত গর্জন করে ছুটে চলল। এক সময় রাত প্রায় শেষ হয়ে এল। ঝড় থেমে গেল, জল নেমে গেল । সুরবালা কোন কথা না বলে বাড়ি চলে গেল। নায়কও তার ঘরে ফিরে এল। নায়কের আয়ুর সমস্ত দিনরাত্রির মধ্যে সেই একটিমাত্র রাতই তার তুচ্ছ জীবনের একমাত্র সার্থকতা বলে প্রতীয়মান হলো।
মন্তব্য : মানুষের জীবনে মাঝেমধ্যে এমন মুহূর্ত দেখা দেয়।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!