Answer

অবশ্য মধ্যযুগের সমস্ত খোলস চুকিয়ে দেওয়া একেবারে আধুনিক কালের এক পরম শক্তিমান মানুষের চিত্তক্রমেই আমরা তাঁর ভিতরে বেশি করে অনুভব করতে পারছি।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু প্রাঞ্জল ও বিশ্লেষণধর্মী রচনার সার্থক রূপকার কাজী আবদুল ওদুদ বিরচিত ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : রাজা রামমোহন রায় তাঁর মননে এবং কর্মে যে যথার্থ একজন আধুনিক মানুষ ছিলেন এ বিষয়টি বুঝাতে লেখক আলোচ্য উক্তির অবতারণা করেছেন।
বিশ্লেষণ : রাজা রামমোহন রায় তাঁর মননে এবং কর্মে একজন যথার্থ আধুনিক মানুষ ছিলেন। রামমোহনের ভিতর আমরা যে মধ্যযুগের খোলস চুকিয়ে দেওয়া একেবারে আধুনিক কালের এক পরম শক্তিমান চিত্তের অনুভব করতে পারি তা পাশ্চাত্যের প্রভাবের ফলে নয়। যদিও রামমোহন পাশ্চাত্য জ্ঞানবিজ্ঞান, পাশ্চাত্য জীবনাদর্শের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তবুও আমরা দেখতে পাই তাঁর চিত্তের বিকাশ ঘটেছে আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের ভিতর দিয়ে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সংশ্রবে তিনি এসেছিলেন যৌবনে। তাঁর আগে থেকেই আমরা দেখতে পাই আরবি ফারসি ও সংস্কৃত অভিজ্ঞ রামমোহন পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে পিতা ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের সাথে বাদানুবাদ করে গৃহত্যাগ করেছেন। তিব্বতসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করেছেন। পরিচিত হয়েছেন নানক, কবীর দাদু আকবর আবুল ফজল দারাশেকো প্রভৃতি ভক্ত ও ভাবুক কর্মীর চিন্তা-চেতনার সাথে। আধুনিক ইউরোপ যেমন মধ্য যুগের কুক্ষি থেকে উদগত হয়েছে রামমোহনের আধুনিক চিত্তেরও তেমনি বিকাশ ঘটেছে আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্য থেকে।
মন্তব্য : রামমোহনের ভিতরে আমরা যে শক্তিমান মানুষের চিত্ত অনুভব করি তা আমাদের নিজস্ব সভ্যতার দান।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!